যুব দর্পণ ডিজিটাল ,শিলচর ৯ ফেব্রুয়ারি :: রাজ্যের জনসম্পদ এবং তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী পীযুষ হাজরিকা বন্যা প্রবণ লক্ষ্মীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে নদী বাঁধ পুনর্নির্মাণ, মেরামতি ইত্যাদি কাজে আগামী চার বছরে ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন।
তিনি বুধবার লক্ষ্মীপুর মহাকুমার রুপাইবালিতে নদী বাঁধ কাম রাস্তা নির্মাণের শিলান্যাস এবং সিঙ্গেরবন্দে বরাক নদীর প্রটেকশন কাজের শিলান্যাস করে আয়োজিত পৃথক দুটি সভায় এ কথা বলেন। মন্ত্রী হাজরিকা বলেন লক্ষ্মীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে আগামী চার বছরে ২০ থেকে ২৫ কোটি করে প্রতি বছরে এই অর্থ দেওয়া হবে বন্যা মোকাবিলার জন্য। রাজ্যে বন্যা মোকাবিলার জন্য চলতি অর্থ বছরে ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে রাজ্যের ৭০ টি বিধানসভা কেন্দ্রে বলে জলসম্পদ মন্ত্রী উল্লেখ করেন। রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদিত ধান এফসিআই মারফত বেশি দামে বিক্রি করার ব্যবস্থা বর্তমান সরকার হাতে নেওয়া রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক অবস্থা উন্নতি হবে বলে মন্ত্রী জানান। মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সহায়তা প্রকল্পের বিবরণ তুলে ধরেন।
রাজ্যে উন্নয়নের হার দ্রুত এগিয়ে নিতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে দৈনিক ১০ লাখ লিটার দুগ্ধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। সভায় উপস্থিত জেলাশাসক কীর্তি জল্লিকে প্রকল্প গুলি বাস্তবায়নের সময় পরিদর্শনের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। রুপাই বালির সভায় বিধায়ক কৌশিক রাই জানান হাতিরহাড়ে ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার আরেকটি প্রকল্প শীঘ্রই মঞ্জুর করা হবে। উভয় সভায় বিধায়ক কৌশিক রাই শিলঘাটে বরাক নদীর উপর সেতু স্থাপন করা হবে বলে দৃঢ়তার সাথে জানান। প্রস্তাবিত সেতুটি মঞ্জুরীর প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে বলেও তিনি ঘোষণা দেন। রুপাইবালির সভায় বিধায়ক রাই জানান যে ৭ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার রুপাইলবালি বাঁধ কাম রাস্তা নির্মাণের টাকা জল সম্পদ বিভাগের হলেও কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত বিভাগ।
রুপাইবালির সভায় পূর্ত বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার রথীন্দ্র বিজয় চক্রবর্তী স্বাগত ভাষণে জানান যে ৪.৪৫ কিলোমিটারের নদীবাঁধ কাম রাস্তাটির প্রশস্ত ৬ মিটার থাকছে। এতে মাটি ভরাটের কাজ সহ সেন্ড গ্রাভেল দিয়ে পেইবার ব্লক বসানো হবে। সিঙ্গেরবন্দে বরাক নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে ৩ কোটি ৪৯ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার কাজটি শিলান্যাস উপলক্ষে সভাটি সিঙ্গার বন্ধের শ্রী লিলি ইংলিশ হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভাষণ দিয়ে জল সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য বাস্তুকার প্রণব কুমার টুরুঙ স্বাগত ভাষণে জানান ৪২৬ মিটার ভাঙ্গন স্থলে জিওটেক প্রোটেকশন দেওয়া হবে। দুটি সভায ই পৌরোহিত্য করে জেলাশাসক কীর্তি জল্লি দুটি প্রকল্পের বাস্তবায়নের হলে মহাকুমারবাসী ব্যাপক ভাবে উপকৃত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। দুটি সভাতেই মনিপুরী ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল এর চেয়ারপার্সন রিনা সিংহ এবং জেলা বিজেপির সভাপতি বিমলেন্দু রায় অংশ নেন। জল সম্পদ মন্ত্রী হাজারিকা সকাল বেলা শিলচর পৌঁছে সোনাই বিধানসভার বিধায়ক করিম উদ্দিন বড় ভূঁইয়াকে সাথে নিয়ে উত্তর কৃষ্ণপুরে বরাক নদীর ভাঙ্গন স্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও শাসক দলের কর্মকর্তা বৃন্দ । বিকেলে মন্ত্রী হাজারিকা ফুলেরতল থেকে লক্ষ্মীপুর শহর পর্যন্ত মোটর বোটে বরাক নদীর ভাঙ্গন স্থল পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার জলসম্পদ এবং তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী হাইলাকান্দি পরিদর্শন করে রামকৃষ্ণ নগর হয়ে করিমগঞ্জ চলে যাবেন। বিকেলে তিনি আবার শিলচর ফিরে এসে রাত কাটিয়ে শুক্রবার গুয়াহাটি চলে যাবেন।